ভাইরাস কমপিউটারের কি ক্ষতি করে এবং ভাইরাসমুক্ত করবেন যেভাবে!

 

ভাইরাস কমপিউটারের কি ক্ষতি করে ?

কম্পিউটার ছাড়া আজ কোন কাজ করা আজ প্রায় অসম্ভব। বর্তমান যুগে মানুষের সব কাজকর্ম কমপিউটার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। কমপিউটারের বহুবিদ ব্যবহার মানব সভ্যতাকে গতিশীল করে সফলতার শীর্ষে নিয়ে যাচ্ছে। যে প্রযুক্তি ধরে এত সফলতা সে প্রযুক্তিই যদি হঠাৎ করে ক্ষতি করতে শুরু করে তাহলে এর ক্ষতিটাও যে কত ভয়াবহ হবে তা আন্দাজ করা দুরূহ। কমপিউটারের ক্ষতিকারক প্রযুক্তি কমপিউটার ভাইরাস কি ক্ষতি করতে পারে তা নিয়েই অনেক বড় পোষ্ট লেখা সম্ভব। নিম্নে সংক্ষেপে ভাইরাসের ক্ষতিকারক কিছু বিষয় নিয়ে আলােচনা করা হল মাত্র-

  • কমপিউটার চলতে চলতে হঠাৎ স্থির (ঐধহম) হয়ে কার্যক্রম স্থগিত করে দেয়। এ অবস্থায় কমপিউটার পুনরায় চালু করতে হয় বিধায় সেভ না করা অনেক মূল্যবান তথ্য হারিয়ে যায়।
  • গুরুত্বপূর্ণ অনেক স্থাপনায় প্রােগ্রাম উলােট-পালােট করে স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত করা ছাড়াও প্রভূত ক্ষতিসাধন করতে পারে। যেমনঃ মেডিক্যাল রেকর্ড, এয়ারট্রাফিক কন্ট্রোল এবং অন্যান্য নিরাপত্তা কার্যক্রম উলােট-পালােট করে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে।
  • ভাইরাস সামান্য কয়েক বিট ডেটা পরিবর্তন করে হিসাব-নিকাষের বিরাট হের- ফের করে (যেমনঃ ব্যাংকিং সেক্টরে) বিরাট অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধন করতে পারে।
  • ডিস্কে সংরক্ষিত অতি মূল্যবান তথ্য হারিয়ে ফেলতে পারে।
  • গুরুত্বপূর্ণ বহুল ব্যবহৃত অনেক প্রােগ্রামের এক্সিকিউটেবল ফাইলকে আক্রান্ত করে করাপ্ট করে দিতে পারে। ফলে এ প্রােগ্রামটি আর রান করবে না।
  • প্রতিদ্বন্দ্বি বিরাট কোন কোম্পানির কমপিউটারাইজড কর্পোরেট সিস্টেমে অনুপ্রবেশ করে গােপনীয় অনেক তথ্য পাচার করে কোম্পানীর বিরাট ক্ষতিসাধন করতে পারে।
  • কোন কোন ভাইরাস হার্ডডিস্ক ফরম্যাট করে গুরুত্বপূর্ণ সব প্রােগ্রাম ও তথ্য নস্ট করে দিতে পারে।
  • ভাইরাস তার বংশবৃদ্ধির কার্যক্রম করতে গিয়ে কমপিউটারের গতিকে মন্থর করে দেয়।
  • হার্ডডিস্কের সেক্টর নষ্ট করে দিতে পারে। এতে করে ডস কোন ফাইলকেই নির্দিষ্ট ঠিকানায় খুঁজে পাবে না।
  • কিছু ভাইরাস হার্ডডিস্কের বুট সেক্টর আক্রান্ত করে। আক্রান্ত হার্ডডিস্ক ফরম্যাট করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না। ফরম্যাট করার ফলে অনেক মূল্যবান ফাইল/উপাত্ত হারাতে হয়।
  • কিছু কিছু ভাইরাস সিপিইউ এর রিড/রাইট ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়।
  • হার্ডডিস্ক ডিস্কে অনেক জায়গা নষ্ট করে।
  • কোন কোম্পানীর ওয়েব পেজের তথ্য বিকৃত করে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য বিফল করা ছাড়াও ভাবমূর্তি নষ্ট করে বিরাট ক্ষতিসাধন করতে পারে।
  • বায়ােসের প্রােগ্রাম মুছে দিতে পারে। ফলে কমপিউটার চালু হবে না।


কম্পিউটার ভাইরাস আক্রান্ত হলে তা কিভাবে বুঝা যায় ?


কম্পিউটারের নিম্নলিখিত লক্ষণগুলাে দেখা গেলে বােঝা যাবে কমপিউটার বা ল্যাপটপ ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে

  1.  কমপিউটারের স্পীড কমে যায়।
  2.  প্রােগ্রাম লােড টাইম বেড়ে যায় ।
  3. মজার কিংবা অদ্ভুত কিছু এরর ম্যাসেজ প্রদর্শন করে
  4.  দৈনন্দিন ব্যবহৃত ফাইলগুলাের আয়তন বৃদ্ধি পায়।
  5.  ফ্রি ডিস্ক স্পেস বহুলাংশে হ্রাস পায়।
  6.  মাইক্রোকমপিউটার লক-আপ হয়ে যায় ।
  7. হঠাৎ কমপিউটার শাটডাউন হয়ে যায়।
  8.  ফাইলের মাঝেই কমপিউটার হ্যাং হয়ে যায়।


কম্পিপিউটারকে ভাইরাসমুক্ত রাখতে কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায় ?

কম্পিপিউটারকে ভাইরাসমুক্ত রাখতে হলে নিম্নের পদক্ষেপগুলাে গ্রহণ করা যায় –

  1. কম্পিপিউটার বা ল্যাপটপ এন্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার রাখা এবং নিয়মিত রান করা।
  2.  এন্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার নিয়মিত আপডেট করা।
  3.  অন্যের ডিস্ক বা ফাইল ব্যবহারের আগে পরীক্ষা করে নেয়া।
  4. নিয়মিত ফাইল ব্যাকআপ করা।
  5. পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার না করা।
  6.  ই-মেইল ব্যবহারের সময় উপযুক্ত ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করা।
  7. ঈড়স এবং উীব ফাইলগুলােকে রিড অনলি করে রাখা।
  8. কমপিউটারের সেটআপ ভাইরাস প্রতিরক্ষা সক্রিয় রাখা।
  9. সকলকে ভাইরাস প্রতিরােধে উদ্বুদ্ধ করা।

Comments